
কাটিং সিনথেটিক ম্যাটেরিয়ালস বাই মেশিন
৪ সপ্তাহ
এই ইনফরমেশন শিটটি পড়ার পর আপনি কর্মক্ষেত্রে ব্যবহৃত ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত উপকরণ (পিপিই) সনাক্ত করতে সমর্থ হবেন এবং ওএসএইচ অনুশীলন এবং অনুসরণ করতে পারবেন।
কর্মক্ষেত্রের ভেতরের নিরাপত্তা হাহিদা
১। দুই হাত দিয়ে সকল ক্লিকিং প্রেস অপারেটর করুন।
২। শুধুমাত্র প্রকৃত ছুরিটিই ক্লিকিং বোর্ডের ব্যবহার করুন।
৩। ক্লিকিং বোর্ডের কাঁচি এবং ছুরি রাখবেন না।
৪। নিচের প্রান্তে ক্লিকিং ছুরি আটকাবেন না। কেননা বোর্ড হতে সেটি ছিটকে বের হয়ে আসতে পারে।
৫। ছুরি ধার দেয়ার জন্য গুঁড়ো পাথর ব্যবহার করার সময় নিরাপত্তা প্রতি নজর রাখুন। চোখে নিরাপদ চশমা ব্যবহার না করে গুঁড়া পাথর ব্যবহার করবেন না।
৬। গ্রাইন্ড স্টোন ব্যবহার না করলে এর সুইচ বন্ধ রাখুন।
৭। ঢিলেঢালা পোষাক ব্যবহার করবেন না। কেননা, মেশিনের সাথে তা আটকে যেতে পারে।
৮। অন্য কাউকে মেশিনের কাছে লম্বা চুল নিয়ে যাওয়া বা ঢিলেঢালা পোষাক পরিধান করে যাওয়ার অনুমতি দেবেন না।
৯। তী² ধারওয়ালা ছুরি ব্যবহারের ক্ষেত্রে যতœশীল হবেন। কেননা, এগুলোতে আপনার আঙ্গুল কেটে যেতে পারে।
১০। ছুরি বের করার সময় কখনও হাত অথবা আঙ্গুল প্রেস বিমের নিচে রাখবেন না।
১১। মেশিন ঘোরানোর পরে ক্লিকিং বোর্ডে কোন কিছু রাখবেন না।
১২। মেশিন দিয়ে কাজ করার সময় অসতর্ক হবেন না।
১৩। অগ্নি নির্বাপন সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখুন।
১৪। নিজে নিজে কখনো বৈদ্যুতিক মেরামতের কাজ করবেন না।
যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জামাদি অপারেট করার সময়-
১। চলমান অবস্থায় যন্ত্রপাতির পাশেই থাকুন।
২। সম্পূর্ণ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ব্যবহৃত মেশিন থেকে সরে যাবেন না। বন্ধ করার পর পাওয়ার টুলস ‘উইন্ড ডাউন’ হতে মাত্র কয়েক মুহূর্ত সময় লাগে। কিন্তু যদি, মেশিনের বিভিন্ন অংশ তখনও চলমান থাকে তবে এতে কেউ আহত হতে পারে।
৩। মেশিনের চলমান অংশ থেকে হাত দূরে রাখুন।
৪। নিশ্চিত হউন যে কোন যন্ত্রের কাটিং অংশ পাওয়ার কার্ডের সংস্পর্শে না আসে।
৫। সবসময় দৃঢ় মুষ্টিব্ধ থাকুন।
৬। অ্যাডজাস্ট করার আগে পাওয়ার টুলস্ বন্ধ রাখুন। কোন কিছু ঠিক বা পরিবর্তণ কর।
ফায়ার সতর্কতা
১। প্রতিটি কক্ষের বিপরীত দিকে কমপক্ষে দুটো বহির্গমন রাস্তা রাখুন।
২। হবির্গমন রাস্তা পরিষ্কারভাবে মার্ক করুন। সেখানে চলাচলে কোন বাধা থাকবে না। বহির্গমন রাস্তা কখনো তালাবদ্ধ রাখবেন না। তালাবদ্ধ থাকলেও তা যেন সহজেই খোলা যায় তা নিশ্চিত করুন।
৩। প্রতি মাসে অন্তত একবার অগ্নি নির্বাপন মহড়া দিন।
৪। ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে ব্যাটারিচালিত অগ্নি-বিপদ সংকেত ব্যবস্থা রাখুন আর বহির্গমন রাস্তা ও সিঁড়িতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাকুন।
৫। অগ্নি নির্বাপকের অনুপাত প্রতি ১০০০ বর্গফুটে একটির কম হবে না। কাজের স্টেশন থেকে অগ্নি নির্বাপকের দূরত্ব ৭৫ ফুটের বেশি হবে না।
৬। অগ্নি নির্বাপকগুলোর আকার যথোপযুক্ত হতে হবে যেন কর্মীরা সেগুলো সঠিকভাবে উত্তোলন করতে পারেন। একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর অগ্নি নির্বাপকগুলো চেক করুন।
৭। অগ্নি নির্বাপকগুলোর অবস্থান ভালোভাবে মার্ক করুন এবং এগুলো চালানোর নিয়মালী স্থানীয় ভাষায় অগ্নি নির্বাপকের গায়ে লাগিয়ে রাখুন।
ভূমিকম্প
ভূমিকম্পের সময় যা করতে হবে-
১। শান্ত থাকুন।
২। যথাসম্ভব ভবনের ভেতরই অবস্থান করুন।
৩। জানালা এবং ভারী আসবাবপত্র থেকে দূরে থাকুন।
৪। আচ্ছাদন (কভার) রাখুন, দরজা ব্যবহার করুন।
৫। শক্ত টেবিলের নেচে অবস্থান নিন। অথবা অন্য কোন মজবুত কাঠামোর নিচে থাকুন।
ভূমিকম্পের পরে, ভবনটি যদি ক্ষতিগ্রস্থ হয় তবে-
১। পানি, বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের প্রধান সংযোগ বন্ধ করে দিন।
২। প্রয়োজনীয় পানি সংরক্ষণ করুন।
৩। শারীরিক কোন ক্ষতি হলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।
৪। প্রতিবেশীর সাথে যোগাযোগ রাখুন। কারণ তাদের সাহায্যের দরকার হতে পারে।
৫। সাহায্যের জন্য নিকটবর্তী সিভিল ডিফেন্স অফিসে যোগাযোগ করুন।
৬। ধ্বংস বা ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ ম্যানেজাররে অবহিত করুন। প্রয়োজনে পরামর্শ দিন।
আগুন এবং জরুরি পদ্ধতিসমূহ
শিল্পকারখানার সকল স্টাফ আগুন বা ধোঁয়া সম্পর্কে জানার সাথে সাথে ফায়ার ডিপার্টমেন্টকে তাৎক্ষণিকভাবে জানান। কাছের কোন নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিন। বিল্ডিং থেকে বের হওয়ার সময় অগ্নি সতর্ক ঘন্টা পদ্ধতিকে চালু করুন। সম্ভব হলে শিল্পকারখানা থেকে বের হওয়ার পর ১২৩ নং-এ জরুরি টেলিফোন করুন।
জেনেরিক
শিখনফল ১: কর্মস্থলে নিরাপদে এবং স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে কাজের কৌশল অনুসরণ করতে পারবেন।
বিষয়বস্তু
১। প্রয়োজনীয় উপকরণ ও মেশিন ব্যবহারের আগে, ব্যবহারের সময় ও পরে নিরাপত্তাজনিত নিয়ম-কানুন অনুসরণ করা। ২। যন্ত্রপাতি এবং ম্যাটেরিয়াল ব্যবহারের সময় নিরাপত্তাজনিত সতর্কতা চিহ্নিত করা।
৩। ব্যাক্তিগত নিরাপত্তাজনিত পোশাক পরিধান করা।
অ্যাসেসমেন্ট ক্রাইটেরিয়া
১। প্রয়োজনীয় উপকরণ ও মেশিন ব্যবহারের আগে, ব্যবহারের সময় এবং ব্যবহার পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় সকল নিরাপত্তার নিয়ম অনুসরন করতে পারবেন।
২। প্রয়োজনীয় উপকরণ ও মেশিন ব্যবহারের আগে, ব্যবহারের সময় ও ব্যবহার পরবর্তী সময়ে অনিরাপদ অথবা ত্রæটিপূর্ণ যন্ত্রপাতি চিহ্নিত করতে পারবেন এবং সেগওলো নির্দেশিত উপায়ে মেরামত করতে পারবেন।
৩। বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি এবং ম্যাটেরিয়াল ব্যবহারের সময় নিরাপত্তাজনিত সতর্কতা চিহ্নিত করতে পারবেন।
৪। ব্যাক্তিগত নিরাপত্তাজনিত পোশাক পরিধান করতে পারবেন।
শর্তাবলি
প্রশিক্ষণার্থীদের অবশ্যই নি¤œবর্ণিত উপকরণ সরবরাহ করতে হবে-
১। বই, ম্যানুয়াল
২। মডিউল বা রেফারেন্স
অকুপেশন
শিখন উদ্দেশ্য
এই ইনফরমেশন শিটটি পড়ার পর আপনি কর্মক্ষেত্রে সেটআপ করতে সক্ষম হবেন।
পরিচিতি
উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কাটিং কক্ষ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি সেকশন। ব্যবসার লাভের ওপর তার একটি বড় প্রভাব রয়েছে। গার্মেন্টস পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ার নিচে কতিপয় বিষয় উল্লেখ করা হলো যা কাটিং কক্ষের সুদক্ষ ব্যবস্থাপনার বর্ণনা করবে। যেমন-
* কাটিং কক্ষ হলো কারখানার ফিডিং পয়েন্ট। চামড়াজাতদ্রব্য সেলাই, ফিনিশিং প্রভৃতি উৎপাদনের পরবর্তী প্রক্রিয়ায় খুব বড় প্রভাব রয়েছে।
* কাটিং কক্ষের সুদক্ষ এবং সুপরিকল্পিত পরিচালনা অন্যান্য পরবর্তী প্রক্রিয়ায় সাবলীলভাবে কাজের গতি নিশ্চিত করে এবং রিসোর্সের ব্যবহারও বৃদ্ধি করে।
* কৃত্রিম উপকরণের ব্যবস্থা কাটিং কক্ষ নিয়ন্ত্রণ করে। যা চামড়াজাত দ্রব্যের মূল্যের ওপর সবচেয়ে বেশি অবদান রাখে। এমনকি সামান্য অপচয় অথবা কাপড়ের সঞ্চয় লাভের ওপর প্রচুর প্রভাব বিস্তার করে।
* কাটিং চামড়াজাত দ্রব্য উৎপাদনের প্রথম অপারেশন হওয়ায় এটা উৎপাদিত চমাড়াজাতদ্রব্যের মানের ভিত্তি স্থাপন করে। কাটিং প্রক্রিয়ায় প্রক্রিয়ায় অম্পূর্ণতা থাকলে তা অন্যান্য সকল প্রক্রিয়ার গুণগত মানে বিরূপ প্রভাব ফেলে।
কাটিংবোর্ড পরিষ্কারকরণ
কাটিং বোর্ড থেকে মোল্ড দুর করতে তরল বিøচিং মিশ্রণ দ্বারা বোর্ডটি ঘসে পরিষ্কার করার চেষ্টা করুন। বোর্ডের ওপর কয়েক মিনিট বিøচ রাখুন। তারতপর পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলন এবং প্রয়োজনে মৃদু আঘাত করুন। বোর্ডে কোনো মোল্ড থাকলে মোটা দানার লবণ দিয়ে ঘসে ঘষে বোর্ড পরিষ্কার করুন। লবণ ব্যবহার ফলে বোর্ডের দুর্গন্ধ দূর হবে। পানি দিয়ে ভালোভাবে ধোয়ার পর তরল বিøচ দিয়ে পুনরায় ঘষুণ।
মোল্ড দুল হওয়ার পর, সবসময়ই ভালোভাবে পরিষ্কার করার অনুশীলন করবেন। কখনও পানিতে কাঠের কাটিং বোর্ড ডুবাবেন না। আর্দ্রতার কারণে মোল্ডের সৃষ্টি হয়। প্রতিবার ব্যবহারের পর, গরম সাবানযুক্ত পানি অথবা ভিনেগার দিয়ে বোর্ডটি মুছে ফেলুন। বোর্ড থেকে অতিরিক্ত তরল শুষে নেয়ার জন্য পরিষ্কার ও শুকনা কাপড় ব্যবহার করুন।
প্রতিরোধমূলক যতœ
কাঠের তৈরি কাটিংবোর্ডের ওপর মাটি বা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করার জন্য ভালো করে কাটিংবোর্ডের কাঠকে শুকাতে হবে। ফুড-গ্রেড খনিজ তেল দিয়ে কাঠ ট্রিট করলে দুটি কাঠের ছোট-খাটো ক্রুটি দুর হবে। খাদ্য কণার শোষণ এবং আদ্রতা বন্ধ করবে। যতক্ষণ পর্যন্ত কাঠ তেল গ্রহণ করবে ততক্ষণ পর্যন্ত খনিজ তেল দিন। তারপর যদি অতিরিক্ত কিছু তেল কাঠের ওপর থাকে তবে তা শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে ফেতে হবে। প্রয়োজনে প্রতি মাসেই তেল ব্যবহার করতে হবে।
খুব শক্ত ফিনিশের জন্য, আধা চা চামচ মোম এবং এক কাপ পরিমাণ ফুড-গ্রেড সেফ খনিজ তেলের মধ্যে দিন। তারপর একে মাইক্রো ওয়েভ ত্রিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ সেকেন্ড তাপ দিন। অথবা যতক্ষণ পর্যন্ত মোম না গলে ততক্ষণ পর্যন্ত তাপ দিন। তারপর তেল এবং মোম মিশেয়ে তা প্রয়োগ করতে হবে।
রেকর্ড সংরক্ষণ
* ম্যানুয়াল হ্যান্ডিলিং ডিভাইস
* স্টিল নির্মিত কাটার ছুরি
* ফগর্ড স্টিল কাটিং ছুরি
* কাটিং বোর্ড
* কাঁচি
* মার্কার
* হাতুড়ি
সম্পন্ন হয়েছে
এই ইনফরমেশন শিটটি পড়ার পর স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী ম্যাটেরিয়াল অ্যাসেসমেন্ট শ্রেণিবিন্যাস এবং বাছাই করতে সক্ষম হবেন।
সিনথেটিক ম্যাটেরিয়াল প্রধানত তিন ধরনের হয়ে থাকে-
* উচ্চ গুণগতমান সম্পন্ন
* মধ্যম গুণগতমান সম্পন্ন
* নিম্ন গুণগতমান সম্পন্ন
কিছু কিছু ক্ষেত্রে লেদারের চেয়ে সিনথেটিক ম্যাটেরিয়াল কাটা সহজতর হয়। এই ম্যাটেরিয়ালের ত্রæটি সাধারণত পরিলক্ষিত হয় না। সব অংশেই গুণগতমান একই থাকে। কৃত্রিম ম্যাটেরিয়াল একই আকারের হয়। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায় টাইট ডাইরেকশন অনুযায়ী হয় না। এজন্য প্রায়ই তাদের দ্বিমাত্রিক বাঁক দেখা যায়। একজন কাটারের ম্যাটেরিয়াল কাটিংয়ের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা দক্ষতা থাকা জরুরি। লেদারের চেয়ে এর ব্যয় অনেক গরুত্বপূর্ণ। এই ম্যাটেরিয়াল সাধারণত স্তরে স্তুরে কাটা হয়। তাই একজন লেদার কাটার, সময় শতকরা ৫ ভাগ নষ্ট করতে পারে। এতে যে পরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতি হয় তা লেদারের ক্ষেত্রে একই পরিমাণ ক্ষতি হয় না।
কাটারকে নিশ্চিত হতে হবে যে,
* প্রত্যেকটি প্যাটার্নের ধরন ও আকৃতির জন্য লেআউট করার সময় সর্বোচ্চ মিতব্যয়ী হতে হবে। কারণ লেআউট ব্যবহারে অর্থনীতির অধিক গুরুত্ব আছে।
* ম্যাটেরিয়ালটিকে সঠিকভাবে রাখা হয়েছে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন ধারের দিকে কোনো অতিরিক্ত ওয়েস্ট না থাকে।
* সর্বাধিক দক্ষতার সাথে মেশিন অ্যাডজাস্ট করতে হবে যেন ছুরি এবং বোর্ডের সবচেয়ে কম ক্ষয় হয়।
জুতা উৎপাদনের অনেক ধরনের কৃত্রিম ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করা হয়। তবে প্রধানত দুই ধরনের ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করা হয়। ১. রোল ম্যাটেরিয়াল এবং ২. শিট ম্যাটেরিয়াল।
ক) রোল ম্যাটেরিয়াল
* পিইউ বা পিভিসি কোটেড ফেব্রিক্স
* টেক্সটাইল- নিটেড, ওভেন এবং নন-ওভেন
* বিভিন্ন ধরনের লেমিনেটস (যেমন- গোরটেক্স)
রোল ম্যাটেরিয়াল সাধারণত ৩০ মিটার লম্বা হয়। এটা হার্ডবোর্ড টিউবে পেঁচিয়ে সরবরাহ করা হয়। তাদেরকে গ্যান্ট্রি ফিড (Gantry feed) ) বা ক্লিপ ফিড (Clip feed) ) পদ্ধতিতে কাটা হয়।
গ্যান্ট্রি ফিড (Gantry feed) : ম্যাটেরিয়ালগুলো পূর্ব নির্ধারিত মাপে (সাধারণত ৩-৭ মিটারে) এবং স্তরে স্তরে রাখা হয়। তারপর কাটার আগেই এগুলোকে ক্লিপড বা গাঁথা হয়।
খ) শিট ম্যাটেরিয়াল
* সোল ম্যাটেরিয়ালগুলো হলো সাধারণত রেজিন রাবার, পিভিসি (PVC বা পিইউ (PU)।
* ইনসোল বোর্ড, রিকনষ্টিটিউটেড ম্যাটেরিয়াল থেকে তৈরি করা হয়।
* বিভিন্ন ধরনের রাবারজাতবা প্লাষ্টিকজাত ম্যাটেরিয়াল।
* ফোম রাবার।
শিট ম্যাটেরিয়ালগুলো একটি প্যালেট সোজা প্যাক করে সরবরাহ করা হয়। কাটার পূর্বে এগুলোকে সাধারণত ক্লিপড অথবা গেঁথে নেয়া হয়।
উপকরণের রং, রঙের মাত্রা বা গভীরতা (Shade) অনুযায়ী স্পেসিফিকেশন (Specification)
১। পিইউ (চট) সিনথেটিক জুতার লেদারের বর্ণনা
বৈশিষ্ট
ক) পুরত্ব : ১.০মি.মি-১.১মি.মি
খ) রঙ : যেকোন
গ) পৃষ্ঠ : মসৃণ
ঘ) বেকিং : ঘনীভূত গঠন ফেব্রিক)
ঙ) সর্বোচ্চ টেকসই।
চ) ভালো স্পর্শ অনুভূতি।
ছ) বৈশিষ্ট্য প্রকৃত লেদারের অনুরুপ।
জ) ব্যবহার: জুতা তৈরিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
২। পিইউ (PU) সোফা লেদারের বর্ণনা
বৈশিষ্ট্য
ক) পুরুত্ব : ০.৮, ১.০, ১.২, ১.৪ মি.মি
খ) প্রশস্ত : ৫৪ ইঞ্চি
গ) ব্যবহার : সোফা, চেয়ার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
৩। পিইউ (PU) পিভিসি (PVC) সিনথেটিক লেদারের বর্ণনা।
বৈশিষ্ট্য
ক) প্রশস্থ : ১.৩৭ মি.
খ) পুরুত্ব : ০.৬-১.৫ মি.মি (পিভিসি বেশি হতে পারে)
গ) সুনির্দিষ্টকরণ, পুরুত্ব, রং, প্যাটার্ন, খোদাইকরণ (এমবোড) ক্রেতার চাহিদা অনুসারে হয়।
ঘ) সিনথেটিক লেদার, জুতা, ফার্নিচার, পোশাক, গাড়ির সিট, হাত মোজা, সোফা, হ্যান্ড ব্যাগ এবং মোড়ক তৈরিতে উপযুক্ত।
ঙ) প্রতিযোগিতামূলক মূল্য।
চ) নির্ভরযোগ্য গুণাগুণ।
4|
wmb‡_wUK †j`vi d¨vewi‡Ki eY©bv
‰ewkó¨
K) wmb‡_wUK †j`vi †cvkvK ˆZwi‡Z e¨eüZ nq|
L) cyiæZ¡ :
0.7 wg.wg
M) cÖk¯’ : 53/54 BwÂ
৫। ফেব্রিক ফেইস (ব্যাগ এবং কেইজ) এর বর্ণনা
বৈশিষ্ট্য
ক) ক্যালেন্ডারড ফিল্ম কোটেড- এটি সিল্কভিত্তিক ফেব্রিক ফেইস গার্মেন্ট লেদার।
খ) বিভিন্ন ধরনের পোশাক এবং রেইন গিয়ারে ব্যবহৃত হয়।
৬। পিভিসি (PVC) সিনথেটিক লেদারের বর্ণনা
বৈশিষ্ট্য
ক) প্রশস্থ : ১.৩৭ মি.
খ) পুরুত্ব : ০.৬-১.৫ মি.মি (পিভিসি বেশি হতে পারে)
গ) সুনির্দিষ্টকরণ, পুরুত্ব, রং, প্যাটার্ন, খোদাইকরণ (এমবোড) ক্রেতার চাহিদা অনুসারে হয়।
ঘ) সিনথেটিক লেদার, জুতা, ফার্নিচার, পোশাক, গাড়ির সিট, গ্যাভস, সোফা, হ্যান্ড ব্যাগ এবং মোড়ক তৈরিতে উপযুক্ত।
ঙ) প্রতিযোগিতামূলক মূল্য।
চ) নির্ভরযোগ্য গুণগতমান গুণাগুণ।
৭। শক্ত পিভিসি (চঠঈ) কাঠের প্যাটার্ন ডেকোরেটিভ বর্ণনা
বৈশিষ্ট
ক) স্পেসিফিকেশন : ০.৩৫ * ১৪০০ মি.মি
খ) মূলত ডেকোরেটিভ ওভারলেইং ম্যাটেরিয়াল, কাপবোর্ড প্যানেল এবং স্টিলের দরজায় ব্যবহৃত হয়।
৮। পিইউ (চট) গার্মেন্টস লেদারের বর্ণনা
বৈশিষ্ট
ক) পুরুত্ব : ০.৮-১.৩ মি.মি
খ) প্রশস্থ : ১.৪ মিটার
গ) প্রতিযোগিতামূলক দাম।
ঘ) নির্ভরযোগ্য গুণগতমাণ সম্পন্ন।
ঙ) সব ধরনের পোশাক (গার্মেন্টসে) তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
শিখন উদ্দেশ্য
এই ইনফরমেনশ শিটটি পড়ার স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী আপনি মেশিন দিয়ে উপকরণ কাটতে পারবেন।
ছুরি এবং প্যাটার্ন
* নিজের পাশেরই কাটপিস রাখুন। এটি খুব ভালো অভ্যাস যে, প্যাটার্ন কাটার পার তা উল্টিয়ে বিপরীত প্রান্তের জন্য প্রস্তুত হবে।
* ভালো ইন্টারলকিং ওফাল অফ কাটস্ এক পাশে রাখুন। প্রেসের ওপর ব্যাক স্ট্রাপস কাটার জন্য এটা ব্যবহৃত করুন।
* পেছনের চামড়ার সরু ফালি ছুরি এবং বর্ণিত অংশের অফ কাটস প্রেসের কাছে নিন এবং পেছনের বর্ণিত অংশে দুই জোড়া কাটুন।
* প্রতিটি আলাদা উপাদানের মধ্যে বাইরের অংশ বাঁধন এবং তাদেরকে কাছাকাছি বা পাশে রাখুন। ওপরের উপকরণসমূহ এবং ওপরের ছুরির নকশা আঁকুন এবং কাজের টিকেটের নির্দেশ মোতাবেক ওপরের সাথে ভেতরে ম্যাচ করে কাটা শুরু করুন।
* সিইলন নিংহল থেকে পুরো পেছনের লাইনিং এবং টাংলাইনিং কাটুন। কম্বাইন্ড ড্রিল থেকে অগ্রভাগের, চামড়া আবরণ কাটতে হবে। কাজের টিকেটের ওপর লাইনিং উপকরণ বিষয়ে উল্লেখ আছে।
* ভ্যাম্প ছুরি: যদিও এই ছুরি একটি জ্জ কাটা, গুণগতমান এবং গ্রেইনের জন্য ভ্যাম্প এর সাথে টো-ক্যাপ এবং স্ট্র্যাপ ম্যাচ করতে হবে। স্যাডল এর অন্তর্ভুক্ত এলাকা চিন্হিত করতে পারে।
* কাউন্টার ছুরি: এই ছুরি দিয়ে জুতার বিপরীত দিকের অংশ কাটা হয়। ভ্যাম্প এর বাইরের অংশ সামনের অংশ অপেক্ষা কম গুণসম্পন্ন হয়। এই বিপরীত অংশ তিনটি প্রধান গুণসম্পন্ন অঞ্চলো বিভক্ত হয়। বিপরীত অংশের ভেতরের অংশে ছোট ছোট ত্রæটি থাকতে পারে।
* বিপরীত অংশ (কাউন্টার) কিছুটা হাল্কা (পাতলা) চামড়া থেকে কাটা যেতে পারে। যেহেতু এটি স্টিফনার দিয়ে শক্ত করা হয়।
* এক জোড়ায় দুটো কাউন্টার থাকে।
* টো-ক্যাপ ছুরি: এই ছুরি দিয়ে একটি জুতার টো ক্যাপ অংশ কাটা হয়। এটি জুতার প্রধান অংশ। চমড়ার সবচেয়ে উৎকৃষ্ট এলাকা থেকে কাটতে হয়। এক জোড়া জুতার জন্য দুুই টুকরা কাটতে হবে।
* কোয়ার্টার ছুরি: এই ছুরি দিয়ে শুধুমাত্র জুতার এক-চুতুর্থাংশ কাটা হয়। ভেতরের কোয়ার্টার বাইরের কোয়ার্টারের মতই গ্রেডভুক্ত করা হয়। কিন্তু পূর্ণ কোয়ার্টার সাধারণ বাইরের কোয়ার্টারের চেয়ে এক গ্রেড নিচের হিসেবে গৃহিত হয়। এক জোড়ায় একটি এবং একটি ডান দিকে কাটা থাকবে।
মেশিন চালু ও বন্ধকরণ
* মেশিন চালু করতে তেল সঞ্চালনের জন্য ২-৩ মিনিট অপেক্ষা করুন।ৎ
* চামড়া নির্বাচন করুন এবং মেশিনের পেছনে রাখুন।
* কাটিং বোর্ডের ওপর চামড়া আনুন- যতœবান হতে হবে যেন এলুমিনিয়াম প্লেটের ওপর চামড়ার গ্রেইন উপরি পৃষ্টে কোন আঁচড়া না লাগে।
* কাঙ্খিত ছুরি নির্বাচন করুন।
* প্রেসার স্টোক হাইট এডজাস্ট করুন প্রয়োজনবোধে ছুরির ওপর এই প্রেসার বা চাপ কমপক্ষে ১০ এমএম হঃয় এবং ১৫এমএম এর বেশি থাকে।
* ছুরি কেন্দ্রের ওপর বীমকে তুলুন।
* ছুরি এবং কাটা উপাদান তুলুন।
* পাশের বেঞ্চের ওপর সুশৃঙ্খলভাবে ফ্যাশানেবলভাবে কাটা উপাদান রাখুন।
* এই পদ্ধতি রিপিট করুন। প্রয়োজনবোধে ছুরি পরিবর্তণ করুন।
* কাটিং শেষ হলে ছুরি এবং চামড়া বদল করুন।
* যখন মেশিন বন্ধ করা হয় তখন কাটিং বøকের ওপর মেশিন বিশ্রাম নেবে।
ছুরির আকার এবং প্রেস এর ওপর চাপ এডজাস্ট-
* আর্ম স্টোকের সেটিং করুন। ক্লিকিং বোর্ডের ওপর ছুরি রাখুন।
* চাপ নিয়ন্ত্রণ সেটিং করুন। এটি খুবই গরুত্বপূর্ণ যে, সঠিক কাটিং চাপে প্রেস স্থাপিত হয়। অতিরিক্ত কাপ বোর্ডকে ধংস করে দেয় এবং এতে ছুরি ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
* ক্লিকিং বোর্ডের ওপর এক টুকরো পাতলা কার্ডবোর্ড রাখুন।
* ছোট ছুরিটি কার্ড বোর্ডের ওপর রাখুন।
* কাটিং ডেপথ এর জন্য মেশিন পরীক্ষা করুন।
* যদি মেশিন সঠিকভাবে সেট হয়ে থাকে, তাহলেও এটি কাটতে থাকবে এবং কাটিং বোর্ডের ওপর খুব ছোট একটি ছাপ দেখা যাবে।
* যদি ছুরি নাইলন বোর্ডের ওপর গভীরভাবে কাটতে থাকে, তবে প্রেসার কমিয়ে দিন।
* বোর্ডের ৩টি আলাদা আলাদা এলাকায় কাটিং এর গভীরতা পরীক্ষা করুন।
কর্মক্ষেত্রের গুণগতমান এবং রং ও রঙের মাত্রা অনুযায়ী স্বতন্ত্র জোড়া নির্বাচন
* কাঙ্খিত জোড়ার প্রান্ত না কাটা পর্যন্ত ক্লিকার চলমান রাখুন। পাঁচ জোড়ার লট করে বাতিল করুন। সঠিকভাবে তা পরীক্ষা করুন।
* বান্ডিল শেষ করার পরের কাজ- প্রতিটি বান্ডিলের শেষ প্রান্তে একটি ইলাষ্টিক ব্যান্ড লাগান জমিন ঠিক রাখতে উপরের পিস উল্টিয়ে দিন।
* এটি নিশ্চিত করুন যে পাঁচ জোড়া করে নিরাপদে বান্ডিল করা হয়েছে।
কাটা উপাদানের বান্ডিল
* প্রতিটি উপাদানের গ্রæপে ইলাষ্টিক ব্যান্ড ব্যবহার করুন।
* তারপর প্রতিটি পাঁচ জোড়া একত্রে নিরাপদভাবে বান্ডিল করুন।
ডিসটরশন (বিকৃতি) এবং ত্রæটিসমূহ
* একই সময়ে কাটিং বোর্ডের ওপর একাধিক ছুরি ব্যবহার করবেন না।
* বীমের সাথে বেøডের প্রান্তে ছুরিকে আঘাত করবেন না। তাহলে ছুরি অথবা কাটিং বোর্ড নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ছুরি ছিটকে এসে আপনার মুখে আঘাত করতে পারে।
* যেকোন কারণেই হোক না কেন, প্রেসের নিচে আপনার হাত দেবেন না। যদি ছুরি আটকেও যায়, কাটিং বোর্ড হতে দূরে প্রেসের পাশে বীম দোলান। তারপর ছুরি বের করে নিন।
* ছুরি ধার দেয়ার সময় অবশ্যই নিরাপদ চশমা ব্যবহার কররবেন।
* মেশিনের সাহায্যে চামড়া কাটার সময় কাাঁচি ও অন্যান্য বস্তু বোর্ডের ওপর রাখবেন না।
উদ্দেশ্য
এই ইনফরমেশন শিটটি পড়ার পর আপনি সহজেই কাজের আদর্শবান অনযায়ী ফিনিশড পণ্য পরীক্ষা করতে পারবেন।
কাটার পর পরীক্ষা
পরীক্ষার জন্য যা যা দেখতে হবে-
* সেকশনের সঠিক নম্বর
* বাম এবং ডানের সঠিক নম্বর
* কর্তনীয় বা চিপড সেকশন এবং প্রিক মার্কস এর সঠিকতা
* প্রসারিত হওয়ার সঠিক দিক এবং পরিমাণ
ধাপসমূহ
* প্রতিটি টুকরার গুণাগুণ পরীক্ষা করুন।
প্যাটার্নের সঠিক আকার অনুযায়ী প্রতিটি কম্পোন্টে কাটুন। এখানে অবশ্যই কুচকিয়ে কাটা কম্পোনেন্ট থাকবে না।
কাটা কম্পোনেন্টগুলো একটির উপর আরেটি রেখে ইলাষ্টিক ব্যান্ড দিয়ে বান্ডিল করুন। ইলাষ্টিক ব্যান্ড চারিদেকে এমনভাবে দিন যাতে গ্রেইন অংশ ভেতরে থাকে।
গ্রেইন অংশ ম্যাচিং করার পর কমপ্লিট জুতা পরীক্ষা করুন। এটি অবশ্যই সাইজ এবং জোড়া নম্বর অনুযায়ী চিন্হিত করা থাকেব।
ক্লিাকার চলমান রাখুন যতক্ষণ পর্যন্ত প্রয়োজনীয় জোড়ার প্রান্ত কাটা শেষ না হয়। সাধারণভাবে ৫ জোড়া করে একটি বান্ডিল করা হয়। এগুলো সঠিকভাবে পরীক্ষা করুন।
প্রতিটি বান্ডিল করা হয়ে একটি ইলাষ্টিক ব্যান্ড দিয়ে প্রান্ত আটকে রাখুন। উপরের টুকরা উল্টিয়ে রাখুন যেন গ্রেইন অংশের কোন ক্ষতি না হয়।
নিশ্চিত করুন যে, ৫ জোড়া করে একটি বান্ডিলে নিরাপদে রাখা হয়েছে।
পরিষ্কার কর্মক্ষেত্রে
উদ্দেশ্য
এই ইনফরশেশন শিটটি পড়ার পর আপনি সহজেই কাজের আদর্শমান অনুযায়ী কর্মক্ষেত্র পরিষ্কার করতে পারবেন।
পরিষ্কার ও নিরাপদ কর্মক্ষেত্র
কর্মক্ষেত্রে দুর্বল হাউজকিপিং- এর জন্য প্রায়ই বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে এবং শ্রমিকেরা আঘাত পায়। কর্মক্ষেত্রে পরিষ্কার রেখে এ যাতীয় দুর্ঘটনার সহজেই প্রতিরোধ করা যায়। উত্তম হাউজকিপিং- এর মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রে অধিক কার্যকর ও নিরাপদ করা যায়। কর্মক্ষেত্রের হাউজকিপিং বলতে বুঝায়, ছোট ছোট টুকরা ও ময়লা আবর্জনাকে প্রতিদিন পরিষ্কার করা, এগুলোকে সুনির্দিষ্ট কন্টেইনারে ফেলা এবং নিয়মিত এই কন্টেইনারসমূহ খালি করা। কর্মক্ষেত্রের হাউজকিপিং বলতে দব্যাদি ও যন্ত্রপাতির সংরক্ষণকেও বুঝানো হয়ে থাকে। কর্মক্ষেত্রে আপনার নিজের এবং সহকর্মীর নিরাপত্তা উন্নয়নের খুব সহজ উপায় হলো ভালো হাউজকিপিং এর ব্যবস্থা করা। কর্মক্ষেত্রে দুর্বল হাউজকিপিং এর কারণে দুর্ঘটনার ঘটে থাকে। আমরা সবাই জানি যে ছোট টুকরা, ভাঙ্গা ইট, দেয়াল ভাঙ্গা, নাস্তা ও খাবার হতে সৃষ্ট আবর্জনা দ্বরা ময়লার স্তুপ সৃষ্টি হয়। নির্মাণ কাজে সৃষ্ট আবর্জনা বিভিন্ন আকার আকৃতি থাকে। এগুলো তী² বা ধারালো বস্তুতে পূর্ণ থাকায় এদের নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়। এদের প্যাকেজিং করাও খুব জটিল বিষয়। এগুলো অনেক ক্ষেত্রে মূলবস্তু থেকে আলাদ হয়ে পড়ে থাকে, যা হোচট খাওয়ার মতো ঝুঁকির সৃষ্টি করে। এটি অন্যান্য ঝুঁকিরও সৃষ্টি করে। এটি অন্যান্য ঝুঁকিরও সৃষিট করতে পারে, যা দেখা যায় না। এগুলো বিশৃঙ্খলাও সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া কোনো কোনো অংশ অপরিষ্কার থাকলে যেকেউই সেখানে ময়লা ফেলতে পারে।
কোন দুর্ঘটনা ঘটার পূর্ব পর্যন্ত লোকজন অনেক ক্ষেত্রে হাউজকিপিং- এর প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারে না। খারাপ হাউজকিপিং দুর্ঘটনার ঘটিয়ে থাকে। প্রতিদিনের হাউজকপিপিং এবং পরিষ্কার করার কাজ কয়েক মিনিটের জন্যও কোনো কর্মচারীর জন্য ফেলে রাখা ঠিক নয়। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। কর্মক্ষেত্রে পরিষ্কার রাখতে কর্মচারী বা নিয়োগকারীর প্রত্যেককারীর প্রত্যেকই কাজ শেষ করার সাথে সাথেই ময়লা আবর্জনা সরিয়ে ফেলবেন।
কাজের সময়ের গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা
* দুর্বল হাউজকিপিং- এর জন্য বিভিন্ন বস্তু দ্বারা অনেক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
* কর্মক্ষেত্রে ময়লা আর্জনা পড়ে থাকতে পারে।
* পড়ে থাকা অনেক জিনিসের জন্য হোঁচট খেতে বা দ্রæত বিপদে বড়তে পারেন।
* কর্মক্ষেত্রের স্টোর করা সকল বস্তুকে পরিষ্কারভাবে রাখুন।
* কাজের অগ্রগতির সাথে সাথে সমস্ত ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করুন।
* চলার পথ, র্যাম্প, উপরে উঠার সিঁড়ি ময়লা আবর্জনা মুক্ত রাখার দিকে লক্ষ্য রাখুন।
* যখন কোনো যন্ত্রপাতি ও মেশিন ব্যবহৃত হবে না তখন সেগুলো যত্রতত্র ফেলে রাখবেন না।
* চলাচল ও পরিবহনের জায়গায় পানির পাইপ, বিদ্যুৎ সংযোগ তার এবং ওয়েল্ডিং ফেলে রাখবেন না।
* কাঁদা ও অন্যান্য আঁঠালো বস্তুকে সিঁড়ি, কর্মক্ষেত্র ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জায়গায় ফেলে রাখবেন না।
* গ্রিজ, তেল জাতীয় ও অন্যান্য দাহ্য বস্তুকে নির্ধারিত কন্টেইনার রেখে অপসারণ করুন।
* উন্মুক্ত অথবা হালকা বস্তুকে ছাদ বা খোলা মঝেতে ভালোভোবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করুন। এমনভাবে সংরক্ষণ করুন যেন বাতাসের চাপে সরে না যায়।
* লক্ষ্য রাখুন কোনো ধরনের উপকরণ যেন উপর থেকে পড়ে না যায়। প্রয়োজন কন্টেইনার বা ঢালু পথ ব্যবহার করে নামান।
* খোলা ছাদ বা মেঝে অথবা ছাদ বা মেঝের প্রান্ত এবং যেকোনো গর্ত থেকে উপকরণ অন্তত ৬ ফুট দূরে রাখুন।
* অগ্নি নির্বাপনের জন্য হাউজকিপিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
* দাহ্য আর্বজনা এবং ধ্বংসাবশেষ, ওয়েল্ডিং এর জায়গা থেকে, ফ্লেম কাটিং থেকে, প্রোপেন হিটিং থেকে অথবা অন্য কোন দাহ্য উৎস থেকে অবিলম্বে সরিয়ে ফেলুন।
* অগ্নি নির্বাপন স্টেশন পরিষ্কার এবং সহজেই প্রবেশযোগ্য রাখুন।
* কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা উন্নতির জন্য ভালো হাউজকিপিং একটি সুন্দর উপায়। মনে রাখতে হবে, একটি পরিচ্ছন্ন কর্মক্ষেত্র হলো একটি বিপদমুক্ত কর্মক্ষেত্র।
কার্যকর হাউজকিপিং কর্মসূচির উপাদান
ধুলাবালি এবং ময়লা অপসারণ
কোনো কোনো কাজে পরিবেস্টন এবং বায়ু নির্গমন পদ্ধতি ধুলাবালি, ময়লা এবং বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় টুকরা অপসারণ করতে পারে না বা ব্যর্থ হয়। ভ্যাকিউয়াম ক্লিনার্স হালকা ধূলাবালি, ময়লা ইত্যাদি অপসারণের জন্য উপযোগী। শিল্প কারখানার মডেল, দেয়াল, সিলিং যন্ত্রপাতি, যেখানে ধূলা ময়লা জমে থাকে অথচ পরিষ্কার করার জন্য ঐ সব জায়গায় পৌঁছানো কষ্টকর, সেসব জায়গায় পরিষ্কার করার জন্য শিল্প কারখানায় বিশেষ ফিটিং- এর ব্যবস্থা থাকে।
ঝুঁকিপূর্ণ পদার্থসমূহ অপসারণের জন্য বিশেষ উদ্দেশ্য তৈরি ভ্যাকিউয়াম ক্লিনার্স খুবই উপযোগী। অ্যাসবেসটস অথবা ফাইবার গøাসের ছোট ছোট কণা বের করার জন্য ভ্যাকিয়াম ক্লিনার্স এর সাথে হেপা (হাইএফিসিয়েন্সি পার্টিকুলেট এয়ার) যুক্ত করা হয়।
মেঝে ঝাড়– দেয়ার পূর্বে মেঝের ধূলাবালি কমানোর জন্য মেঝে ভেজানো হয়। এরপর ঝাড়– দেয়ার উপকরণ ব্যবহার করা হয়। শেলফ পাইপের ভেতর, হাল্কা আসবাব, জানালা এবং লকার্স ইত্যাদি যেসব জায়গায় ময়লা, ঝুল-কালি ইত্যাদি জমে সেসব স্থানে ম্যানয়াল ক্লিনিং এর প্রয়োজন হয়।
যন্ত্রপাতি অথবা কারখানার কাজ করার সারফসের উপর থেকে কমপ্রেসড এয়ার এর সাহয্যে কখনো ধূলা ময়লা বা গুঁড়া অপসারণ করা ঠিক না।
কর্মীদের সুযোগ সুবিধা
কর্মীদের জন্য প্রদেয় সুযোগ সুবিধা পর্যাপ্ত এবং ভালো হওয়া দরকার। কর্মীদের ব্যক্তিগত ব্যবহার জিনিসপত্র রাখার জন্য লকার্স বা ছোট ছোট আলমারি রাখা প্রয়োজন। ভালো শৌচাগার সুবিধাও থাকতে হবে। তাদের জন্য সাবান, তোয়ালে ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখতে হবে।
ঝুঁকিপূর্ণ পদার্থ ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। গোসল করার জন্য শাওয়ার সুবিধা, কাপড়চোপড় পরিবর্তন করার ক্ষ ইত্যাদি ব্যবস্থা থাকতে হবে। কেনো কোনো ক্ষেত্রে গোসল করার ব্যবস্থাসহ দুটি লকার রুমের বা আলমারির ব্যবস্থা থাকতে হবে। এই ব্যবস্থা কর্মীদের কর্মক্ষেত্রে গোসলের সুবিধা দেয়। যা কর্মক্ষেত্রে কর্মীদের পরিধানের কাপড় বা দেহে লেগে থাকা সংক্রামক জীবাণূ ধুয়ে দিতে সাহায্য করে। ফলে কর্মীরা পরিষ্কার অবস্থায় নিজের পোশাক পরিধান করে বাসায় যেতে পারেন।
যে সকল কর্মক্ষেত্রে বিষাক্ত পদার্থ ব্যবহৃত হয় সেসব ক্ষেত্রে ধুমপান করার জায়গা অবশ্যই কর্মক্ষেত্র থেকে আলাদা হতে হবে। এছাড়া খাবার জায়গাও কর্মক্ষেত্র থেকে আলাদা হতে হবে এবং প্রতি পিফটে এই জায়গাগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।
সারফেসেস
মেঝে
খারাপ মেঝে দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ। তাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়া তেল এবং অন্যান্য তরল জাতীয় পদার্থ তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার করতে হবে। ছোট ছোট বিভিন্ন রকমের টুকরা এবং জমে থাকা ধূলাবালিও দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। তাই এগুলো মেঝেতে আসার আগেই পরিষ্কার করলে এগুলো জমতে পারে না। কোনো কোনো জায়গায় সবসময় পরিষ্কার করা যায় না। যেমন- প্রবেশী পথ। ঐসব স্থানে অ্যান্টি ¯িøপ ফ্লোরিং থাকা উচিত। মেঝে ভালো অবস্থায় রাখার অর্থ হলো দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে এমন পদার্থ প্রতিনিয়ত মেঝে থেকে সরিয়ে ফেলা।
দেয়াল
হালকা রঙের দেয়াল আলোর প্রতিফলন ঘটায়। কালো রং এর দেয়াল আলো শুষে নেয়। কন্ট্র্যাস্টিং রং শারীরিক ক্ষতি করতে পারে। তবে তা পিলারসমূহকে ভালোভাবে দেখতে সাহায্য করে। তাছাড়া রং রেলিং গার্ড এবং অন্যান্য উপকরণকেও দেখতে সাহায্য করে। কিন্তু নজরদারির বিকল্প হিসেবে একে ব্যবহার করা ঠিক না। এই কর্মসূচি রং এর ব্যবহারবিধি ও মান সম্পর্কে ধারণা দেয়।
হালকা ফিক্সচারস ব্যবস্থাপনা
হালকা ময়লা বা ফেলে দেয়া হালকা ফিক্সচারস প্রয়োজনীয় আলোর পরিমাণ কমিয়ে দেয়। অন্য দিকে পরিষ্কার হালকা ফিক্সচারস্ প্রয়োজনীয় আলো বৃদ্ধি করে।
আইলস্ এবং সিঁড়ি পথ
বসার আসনগুলোর মধ্যবর্তী চলার পথ হতে হবে যথেষ্ট বিস্তৃত যাতে মানুষ এবং যানবাহন সহজে এবং নিরাপত্তা সহকারে চলাচল করতে পারে। এই মধ্যবর্তী রাস্তা ব্যবহৃত হবে মানুষ চলাচলসহ বিবিধ দ্রব্যাদি ও অন্যান্য উপকরণ পরিবহনের কাজে। বিপদচিন্হ ও আয়না অন্ধকার জায়গায় আসা লোকজনকে দেখতে সাহায্য করবে। এই মধ্যবর্তী রাস্তা ব্যবহার কর্মীদের উৎসাহিত করতে হবে যাবে তারা বিপদজ্জনক কোনো সরু রাস্তা দিয়ে চলাচলের ঝুঁকি না নেন।
মধ্যবর্তী রাস্তা এবং সিঁড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা খুবই জরুরি। এগুলোতে কখনোই বিভিন্ন দ্রব্য বা জিনিসপত্র রেখে রাস্তা আটকে দেয়া বা চলাচলের জন্য কঠিন করা উচিত নয়। এমনকি তা সাময়িক সময়ের জন্যও নয়। সিঁড়ি এবং মধ্যবর্তী রাস্তায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হবে।
তরল পদার্থ গড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণ
তরল পদার্থ গড়িয়ে পড়ার আগেই তা বন্ধ করাই হচ্ছে সবচাইতে ভালোা উপায়। এজন্য একটি উপায় হলেঅ- মেশিনসহ অন্যান্য উপকরণ নিয়মিত পরিষ্কার করা এবং সরংক্ষণ করা। অন্য উপায় হলো যেখানে তরল পদার্থ গড়িয়ে পড়তে পারে এমন স্থানে ড্রিপ প্যান রাখা এবং লক্ষ্য রাখা। যদি কখনো তরল পদার্থ গড়িয়ে পড়েই যায় তখন তৎক্ষাণাৎ তা পরিষ্কার করতে হবে। পিচ্ছিল তৈলাক্ত এবং অন্যান্য তরল মুছার জন্য শোষক পদার্থ উপকারী। ব্যবহৃত শোষক দ্বারা অবশ্যই যথাযথভাবে এবং বিপদমুক্তভাবে তরল পদার্থ অপসারণ করতে হবে।
উপকরণ ও যন্ত্রপাতি
হাউজকিপিং উপকরণ ও যন্ত্রপাতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেটা যন্ত্রপাতির কক্ষে বা পেছনের উঠানে অথবা বেঞ্চের ওপর যেখানেই থাকুক না কেন। ব্যবহারের পর সেগুলোকে সাথে সাথে পূর্বের জায়গায় সংরক্ষণ করলে তা হারানোর এবং বিপদের সম্ভাবনা কমে যায়। কর্মীদের সকল যন্ত্রপাতি নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে। একইভাবে পরিষ্কার এবং প্রয়োজনে মেরামত করতে হবে। যদি কোনো যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যায় তবে সেটি সাথে সাথে সরিয়ে ফেলতে হবে।
রক্ষণাবেক্ষণ
দালান এবং যন্ত্রপাতির রক্ষণাবেক্ষণ করা ভালো হাউজকিপিং- এর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। রক্ষাণাবেক্ষণ বলতে দালান, যন্ত্রপাতি এবং মেশিন নিরাপদে এবং কার্যকরভাবে ব্যবহার করার পাশাপাশি এসব মেরামত করাকেও বুঝায়। এর মধ্যে আরো রয়েছে নিয়মিত শৌচাগার ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সুবিধাদি নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেয়াল রং করা ও পরিষ্কার করা। ভাঙ্গা জানালা, নষ্ট দরজা, পানির ব্যবস্থা এবং ভাঙ্গা মেঝে নোংরা ও বিধ্বস্ত কর্মক্ষেত্রে হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এরূপ অবস্থায় দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে এবং কাজের বিঘœ ঘটাতে পারে। সেই কারণে ভাঙ্গা বা নষ্ট হয়ে যাওয়া উপকরণগুলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মেরামত করিয়ে নিতে হবে। একটি ভালো রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচি বলতে নিয়মিত পরিদর্শন, সংরক্ষণ, নিরাপত্তা এবং উপকরণ, যন্ত্রপাতি ও মেশিনের সুরক্ষা ইত্যাদিকে বুঝায়।
আবর্জনা অপসারণ
নিয়মিত আবর্জনা সংগ্রহ, পরীক্ষা, বাছাই ও স্তরীভ’তকরণ ভালো হাউজকিপিং- এর অংশ। এতে যে সমস্ত দ্রব্যাদি পুনরায় ব্যবহৃত হবে এবং যেগুলো অপসারণ করতে হবে তা বাছাই করতে সুবিধা হয়। মেঝেতে দ্রব্যাদি উৎপাদন করলে সময় এবং শক্তির অপচয় হয়। কেননা পরে ঐগুলো পরিষ্কার করতে অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজন হয়। যেখানে আবর্জনা উৎপাদন হয় তার কাছাকাছি ভাঙ্গা টুকরা সংগ্রহ করার পাত্র রাখলে আবর্জনা সংগ্রহ এবং অপসারণ করা সহজ হয়। এছাড়া আবর্জনার পাত্রে সুন্দরভাবে লেবেল লাগাতে হবে (যেমন পুনরায় ব্যবহারযোগ্য গøাস, প্লাষ্টিক টুকরা, ধাতবসমূহ ইত্যাদি)।